Logo
×

Follow Us

মধ্যপ্রাচ্য

বৈরুত বিস্ফোরণ

বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বিক্ষোভকারীদের হামলা, পুলিশ নিহত

Icon

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২০, ১২:২৬

বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বিক্ষোভকারীদের হামলা, পুলিশ নিহত

ছবি: বিবিসি

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে গত মঙ্গলবারের ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ চলাকালে দেশটির কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে হামলা চালিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

এ সময় পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত ও ১১০ জনের বেশি লোক আহত হয়েছেন।

গতকাল শনিবার (৮ আগস্ট) রাতে বিক্ষোভকারীরা সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা চালালে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে তাদের কয়েক ঘণ্টা সংঘর্ষ হয়। পরে তাদের দমনে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। দেশটির কেন্দ্রীয় মারটায়ারস স্কয়ার থেকেও গুলির শব্দ শোনা যায়।

এদিকে গতকাল টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব বলেছেন, সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসার উপায় হিসাবে দ্রুত নির্বাচন চাওয়া হবে। আমরা দ্রুত পার্লামেন্ট নির্বাচন না করে দেশের কাঠামোগত সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো না।

ছবি: রয়টার্স

আগামীকাল সোমবার মন্ত্রিসভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে।

মঙ্গলবারের ওই বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১৫৮ নিহত হয়েছে। দুই হাজার টনের বিশি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট সংরক্ষণের গুদামে বিস্ফোরণ প্রতিরোধে ব্যর্থ হওয়ায় ক্ষুব্ধ দেশটির নাগরিক।

বন্দরের এই বিস্ফোরণ শহরের একটি অংশ ধ্বংস করে দিয়েছে যা সরকারের প্রতি মানুষের অবিশ্বাসকে আরো গভীর করে তুলেছে। এই সরকারের বিরুদ্ধে আগে থেকেই অদক্ষতা ও দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। দেশটিতে অর্থনৈতিক সঙ্কট ও মুদ্রা সংকট নিয়ে গত অক্টোবর থেকে সরকারবিরোধী আন্দোলন চলছিল।

শনিবার বৈরুতের শহীদদের চত্বরে প্রায় ১০ হাজার বিক্ষোভকারী জড়ো হয়ে সরকারবিরোধী শ্লোগান দেয়, তাদের কেউ কেউ পুলিশের দিকে পাথর নিক্ষেপ করে। কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ও দেশের ব্যাংকিং সমিতির সদর দফতরে হামলা চালিয়েছে।

প্রথমে একদল বিক্ষোভকারী সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে থাকে ও প্রেসিডেন্ট মিশেল আউনের প্রতিকৃতি পুড়িয়ে দেয়। এরপর তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রবেশ করে দখলে নেয়।

রেবেকা বলে পরিচয় দেয়া এক বিক্ষোভকারী বিবিসির নিউজ আওয়ারকে বলেছেন, এই জায়গা এখন আমাদের, পুরোপুরি আমাদের, দরজার বাইরে পুলিশ আছে। কিন্তু তারা আমাদের থামাতে পারেনি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভেতরে জড়ো হয় শতাধিক বিক্ষোভকারী, তাদের মধ্যে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও ছিলেন বলে জানা গেছে।  বিস্ফোরণে মন্ত্রণালয়ে প্রবেশপথ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভবনে সহজেই প্রবেশ করতে পেরেছেন বিক্ষোভকারীরা।

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী কয়েক ঘণ্টা পরে বিক্ষোভকারীদের মূল দলটিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বের করে দেয়। তবে অন্যান্য ভবন তখনো তাদের দখলে ছিল বলে জানা গেছে। টিভি ফুটেজে দেখা যায়, প্রতিবাদকারীরা জ্বালানি ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের দফতরেও প্রবেশ করছে।

বিক্ষোভে প্রথমে পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এরমধ্যে কয়েকজন বিক্ষোভকারী পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়লে ও লাঠি নিয়ে এগিয়ে এলেও পুলিশও পাল্টা টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। পার্লামেন্টের বাইরে এমনভাবে ব্যারিকেড তৈরি করা হয় যেন বিক্ষোভকারীরা প্রবেশ করতে না পারে।

পুলিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছে, কেন্দ্রীয় বৈরুতে গোলাগুলি হয়েছে, তবে কারা গুলি চালিয়েছে তা এখনো পরিষ্কার নয়। বিক্ষোভ চলাকালীন একজন পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে ধাওয়া করলে ওই কর্মকর্তা একটি হোটেলের লিফট শ্যাফটে পড়ে মারা যান।

স্থানীয় রেড ক্রস জানিয়েছে, তারা ঘটনাস্থলে ১১৭ জন আহত ব্যক্তির চিকিৎসা করেছেন ও আরো ৫৫ জনকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

বিক্ষোভ চলার সাথে সাথে মারটায়ার স্কয়ারে দেশটির রাজনৈতিক নেতাদের প্রতীকী ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশি বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্তদের স্মরণ করেন বিক্ষোভকারীরা। ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণে ৬০০০ মানুষ আহত হয়েছে আর গৃহহীন হয়েছে প্রায় তিন লাখ মানুষ। -বিবিসি, এপি ও রয়টার্স

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫